সকল শিক্ষক নিবন্ধনধারীর নিয়োগ চাই
***********************************
গল্পটি আমার এক প্রবাসী বন্ধুর কাছ থেকে নেওয়া।
বন মন্ত্রণালয় ব্রাজিল থেকে বিলুপ্তপ্রায় কিছু গাছের চারা দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য আনলেন। যথারীতি চারাগুলো রোপন করা হলো কিন্তু চারাগুলোকে বাচানো গেল না। উদ্ভিদবিজ্ঞানীগন বললেন ঐ দেশ থেকে বীজ এনে চারা করে তবেই আমাদের দেশে লাগাতে হবে। ৬ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশে ১০০ টি চারা উৎপাদন করা হলো যা ১০ বিঘা জমিতে রোপন করা যায়। কিন্তু ঐ চারা রোপনযোগ্য জমি আছে মাত্র ৭ বিঘা। এখন বাকী ৩০ টি চারা কি করা যায়? উদ্ভিদবিজ্ঞানীগন বললেন যেহেতু অনেক কষ্ট ও ত্যাগের বিনিময়ে চারাগুলো উৎপাদিত হয়েছে তাই ৭০ টি চারা ৭ বিঘা জমিতে লাগিয়ে ৩ বিঘা জমি চাষ উপযোগী করতে হবে ৩০ টি চারা রোপন করতে হবে ।
এবার আসি মুল বিষয়ে। বর্তমানে শুণ্যপদের চেয়ে নিবন্ধনধারী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। এখানে মনে রাখতে হবে “মাথার রোগ হলে মাথা কেটে ফেলা কোন স্থায়ী সমাধান নয়।” তাই পদ সৃষ্টি করে নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ দেওয়া রাষ্ট্রের মানবিক ও পবিত্র দায়িত্ব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে এমনটিই বলা হয়েছে।
“জাতীয় পর্যায়ে স্বল্প, মধ্যম ও উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের তথ্য সম্বলিত একটি ইন্টিগ্রেটেড ডাটাবেইজ তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজন ও তরুণদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদন করার আহ্বান জানাতে পারবে।” bdnews24.com 18 dec,2018
আমরা মনে করি লক্ষ লক্ষ প্রার্থীর মধ্যে NTRCA এর মাধ্যমে বাছাইকৃত শিক্ষক নিবন্ধিতগণ “উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের তথ্য সম্বলিত একটি ইন্টিগেটেড ডাটাবেইজ”। তাই এই ডাটাবেজ থেকে সরকারি সেবায় প্রবেশ করা প্রতিটি শিক্ষকের শুধু সুযোগই নয় ; মৌলিক অধিকার।
আবার নিবন্ধনধারীদের অনেকেই——
* সরকারী চাকুরী পেয়েছেন।
* কেউ বেসরকারী ভাল বেতনে চাকুরী পেয়েছেন। * কেউ বিদেশ গিয়েছেন।
* কেউ ভাল ব্যবসা করছেন।
* অনেকের একাধিক নিয়োগ আছ ।
* কেউ এমন কিছু করছেন যে আর শিক্ষকতা পেশায় আসবেন না।
* অনেকের ৩/৪ বিষয়ে নিবন্ধন সনদ আছে। আমার নিজেরই কলেজর ৩টি সাবজেক্টে সনদ আছে। মাদার সাবজেক্টে ১টি, ফাদার সাবজেক্টে ১টি, আদার সাবজেক্টে ১টি।
* ৫ম নিবন্ধন পরীক্ষা পর্যন্ত পাশের হার ছিল খুব কম। তাই সেখানে চাকুরী প্রত্যাশীর সংখ্যা খু-উ-ব কম। এভাবে হিসাব করলে দেখা যাবে ২০% চাকুরী প্রত্যাশী।
যেভাবে পদ সৃষ্টি সম্ভব
—————————–
শিক্ষাবিজ্ঞানে আদর্শ শিক্ষাদান নিশ্চিতকরণে শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৪০ বলা আছে। পৃথীবীর বিভিন্ন দেশে তা কার্যকর আছে। এভাবে হিসাব করলে কয়েক লক্ষ পদ সৃষ্টি হবে। যেমন
*(১) মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র-ছাত্রী/ সবল-দূর্বল আলাদা সেকশন করা ( যেখানে যেমন দরকার) যেতে পারে।
(২) উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আবশ্যিক ও কঠিন বিষয়ের ক্লাস সমুহ ১:১৫ টার আগে শেষ করার জন্য ১০০+ জন শিক্ষার্থী থাকলে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। সহজ ও ৪র্থ বিষয়ের ক্লাস বিরতীর পর নেওয়া যেতে পারে।
(৩) সম্ভবত ২০২২/২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সকল বিষয় ৩ পত্র বিশিষ্ট হবে সেখানেও ১০০+ জন শিক্ষার্থী থাকলে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
(৩) ডিগ্রি (পাশ) স্তর আগে ২ বছর ছিল শিক্ষকও ছিল ২ জন। এখন স্তর ৩ বছর হওয়ায় শিক্ষকও ৩ জন হবে এটাই যৌক্তিক।
(৪) অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষকবৃন্দ দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত বেতন বিহীন। এখানে বেশির ভাগ শিক্ষক খন্ডকালীন। এক্ষেত্রে নিবন্ধনধারী শিক্ষক নি:সন্দেহে বেশি যোগ্য।
নিবন্ধন সনদে বলা আছে He/She is eligible to be appointed as a Lecturer/ Assistant Teacher of any School/ College/ Madrasa in Bangladesh. হাই কোর্টের রায়েও সকল নিবন্ধনধারীর চাকুরী দেওয়ার কথা বলা আছে।গতবছর ২৭০০ প্রতিষ্টান MPOভুক্ত হয়েছে সেখানে নিবন্ধনবিহীন ৫০+ বয়সী শিক্ষকও রয়েছেন। তাহলে, এক্ষেত্রে নিবন্ধনধারী ৩৫+ শিক্ষক আরো বেশি যোগ্য। কেউ নিয়োগ না পেয়ে, কেউ MPO না পেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাকীরা পরিবারের ও সমাজের বোঝা হয়ে জীবন্ত লাশ হয়ে আছে। তাই অনতিবিলম্বে
সকল নিবন্ধনধারী শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়ে জাতিকে মুক্ত করুন।
0 মন্তব্যসমূহ