দেশ রক্ষায় ইস্পাত দৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দুপুরে সিলেটের রেজিস্ট্রারী মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত, তারা আজ রাজনীতি ও দুর্নীতি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। মানুষ হত্যা করা হচ্ছে।
দেশের মানুষ আজ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগে পুলিশের আইজি একটি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন এবং ডিএমপি কমিশনার বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা শালীনতার বাইরে। আইজিপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শালীনতা ও রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে তাদের অপসারণ দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
১০টায় পতাকা ও নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জয়গীরদারের সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, সরকার বলছে দেশে মেগা উন্নয়ন হচ্ছে।
কিন্তু আসলে মেগা ডেভেলপমেন্টের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুকে কলুষিত করে ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্নীতির টাকা পাচার করা হচ্ছে কানাডায়। সেখানে বেগমপাড়া গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, 'আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, যেখানে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে, সেখানে আমরা নির্ভয়ে কথা বলতে পারি।
কিন্তু স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে ১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলেন। তিনি দেশের অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিত্তি দিয়েছেন।
এই সরকার আবার সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগও আজ স্বাধীন নয়। বিচারকদের কোনো স্বাধীনতা নেই। ডিসি এসপি এবং আইন মন্ত্রণালয়কে তারা যেভাবে চায় সেভাবে বিচার করা হয়। তাদের নির্দেশে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয় ও ডিসি-এসপির নির্দেশে বিচার বিভাগ পরিচালিত হয়। বাহাত্তরের সংবিধান আওয়ামী লীগ কর্তৃক ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে, নিজের প্রয়োজনে। তার পরেই তৈরি হয় একদলীয় বাকশাল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রয়োজনে ৭২-এর সংবিধান যোগ ও বিয়োগ করেছে। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ জেড.M.M জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মোঃ এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির,
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদসহ ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক,
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বগুড়া পৌরসভার মেয়র ও নির্বাহী সদস্য মোঃ রেজাউল করিম বাদশা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান মিজান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পোনকি, হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ