Hot Posts

6/recent/ticker-posts

প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠিঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
জানিনা এই আর্তনাদ আপনার কাছে পৌঁছাবে কিনা!!

বিষয়ঃ
করোনা, লকডাউন, স্কুল বন্ধ, গণপরিবহনে ভাড়া দ্বিগুণ, দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি সহ ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি জন্য আবেদন।

জনাবা,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আমরা আপনার বাবার নের্তৃত্বে গড়া স্বাধীন বাংলাদেশের সাধারণ জনতা!
আমরা শান্তি চাই, আমরা নিরাপত্তা চাই, আমরা সরল জীবন যাপন চাই।

আমরা জানি আপনার নের্তৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত আমাদের দেশ পরিচালিত হচ্ছে, আপনার দল দেশের বর্তমান করোনা মহামারির ক্রান্তিকাল মোকাবেলার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

আপনি দেশের মানুষকে শান্তি ও নিরাপত্তায় রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, কিন্তু, প্রিয় নেত্রী আপনি কি জানেন আজ সাধারণ মানুষ কত কষ্টে, কত দুর্দশায় দিনাপাত করছে? আপনি কি জানেন যারা দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক তারা কতটা অসহায় ভাবে দিন পার করছে?

আজ রাস্তায় বের হলে, হাটে ঘাটে, চা স্টলে বসলে বুঝা যায় মানুষের আত্বচিৎকার, মানুষ যতটা না করোনায় কষ্ট পাচ্ছে তার থেকে শতগুণ বেশী কষ্ট পাচ্ছে করোনা প্রতিরোধ করতে যেয়ে, প্রিয় নেত্রী আমি সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে চাই, এই করোনা ভাইরাস হয়তো সারাজীবনই থাকবে, এটাকে পুরোপুরি নির্মুল করা সম্ভব নয়।

এখন এর জন্য কি বছরের পর বছর আমাদের সাধারণ মানুষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, বিশ্বাস করুন এই করোনা ভাইরাস সবার হয়না, কেউ মাস্ক ছাড়া করোনা রোগির পাশে থেকেও সুস্থ আবার অনেকেই করোনার আশে পাশেও না যেয়ে আক্রান্ত!

এখন এই ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া অবশ্যই জরুরি, কিন্তু আপনার মন্ত্রীপরিষদ মন হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে আগাচ্ছে! একটা লকডাউন সফল করতে হলে অবশ্যই সমস্ত কিছু বন্ধ রাখতে হবে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি সহ সব ধরনের অফিস প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র জরুরি সেবা ছাড়া, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি লক্ষ করুন,,

লকডাউন ঘোষণার সাথে সাথেই রাজধানী থেকে হাজার হাজার মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে গাদাগাদি করে গ্রামে যাচ্ছে, এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ কমার থেকে আরো বাড়ার সুযোগ তৈরী হচ্ছে।

একটা লকডাউন দিলে দিনমজুরদের কাজ বন্ধ হয়ে যায়, তাদের না খেয়ে থাকতে হয়, আপনি অবশ্যই তাদেরকে খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য অর্থ এবং খাদ্য দিয়ে থাকেন, কিন্তু সুষম বণ্টনের অভাবে সেটা আর গরীবরা পায়না! তাই লকডাউন দেয়ার আগে সবার জন্য খাদ্য ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ রইলো।।

প্রিয় নেত্রী আরেকটি বিষয় মনে পড়ে গেল, আমরা জানি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, বর্তমানে শিক্ষায় শিশুরা শিক্ষিত হয়েই আগামীর দেশ পরিচালনা করবে, বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত হবে, বিভিন্ন গবেষণা, মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব পাবে! কিন্তু করোনা মহামারির কারণে বিগত দীর্ঘদিন যাবত সব ধরনের শিক্ষালয়গুলো বন্ধ রয়েছে, যার ফলে কি হচ্ছে…..

যারা স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল, তারা আজ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে, কিশোর গ্যাং তৈরী করছে, মোবাইল গেমস, টিকটক ইত্যাদি নেশায় ঝুকে পড়ছে। শিশুশ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারো কারো জীবন থেকে লেখাপড়া চিরতরে চলে যাচ্ছে, বেকার সংখ্যাও বাড়তেছে, দীর্ঘদিন মেয়েদের বাড়িতে রাখতে যেয়ে বাল্যবিবাহ বেড়েই চলছে, এতগুলো কারণ বিবেচনা করে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ চরম হুমকির মুখে নিপতিত লক্ষনীয়!!

জননেত্রী, করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দিকের অসংগতি থাকলেও আরেকটি বিষয় না বললেই নয় গণপরিবহনের ডাকাতি, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ৬০% ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেই এটা কোনভাবেই কার্যকর হচ্ছেনা, ভাড়া ৭০-৮০% বৃদ্ধি করেও নেয়া হচ্ছে, আবার যাত্রীও বেশিরভাগ সময় অর্ধেকের বেশি নেয়া হচ্ছে।

ফলে করোনা প্রতিরোধে যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সেটাও হচ্ছেনা আবার গরীবের কষ্টার্জিত টাকাও বেশি দিতে হচ্ছে, ফলাফল শুধু সাধারণ মানুষ যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে, সাথে দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি তো আছেই।

এত এত সংগতিপূর্ণ লকডাউন সহ করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা সাধারণ মানুষ কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা, ফলে মানুষের মাঝ থেকে করোনার প্রতি অবিশ্বাস চলে আসছে, কেউ আর ভয়ে ঘরে থাকতে চাচ্ছেনা।।

অতএব,
জনাবার নিকট আকুল আবেদন উপরিউক্ত সকল বিষয়গুলো বিবেচনা করিয়া সবার ঘরে ঘরে সুষম বন্টনের মাধ্যমে খাদ্য পৌঁছে দিয়ে একদফা কঠোর লকডাউন দিন, তার পর সবার টিকার ব্যবস্থা করুন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে আগামীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের পথকে আরো সুগম করুন।।
আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি………

সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে
খন্দকার রাসেল,
কালিহাতী টাঙ্গাইল।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ