বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিপূর্বে বদলি ব্যবস্থা চালু না থাকলেও ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা ২০১৫ ইং সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেত এবং প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করার সুযোগ পেত।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২০১৫ ইং সনে NTRCA নিয়োগ সুপারিশের ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন বন্ধ হয়ে যায়। ধীরেধীরে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন / বদলি প্রক্রিয়া চালু করা জরুরী হয়ে পড়ে। আর সেজন্যই, ইনডেক্সধারী নিবন্ধনবিহীন ও নিবন্ধনধারী শিক্ষকদের মধ্যে বদলি চালু হওয়ার প্রয়োজন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।
যার ফলশ্রুতিতে ২০১৯ ইং সনে একঝাক তরুন,মেধাবী ও পরিশ্রমী শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয় বদলি বাস্তবায়ন কমিটি। কমিটি গঠনের পর থেকেই বদলি বাস্তবায়ন কমিটি ধারাবাহিকভাবে বদলি আন্দোলন করে আসছে। শিক্ষা সচিব, শিক্ষা অতিরিক্ত সচিব, ডিজি, কারিগরি ও মাদ্রাসা সচিব, NTRCA চেয়ারম্যান মহোদয়সহ সকলের কাছে বদলি বাস্তবায়ন কমিটি স্ব-শরীরে গিয়ে বদলি’র গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বদলি বাস্তবায়নের জন্য স্বারকলিপী ও আবেদন জমা দেন।
শুধু মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে স্ব-শরীরে সাক্ষাত করতে না পারলেও সচিবালয়ে গিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের কার্যালয়ে স্বারকলিপী ও আবেদন জমা দিয়ে আসেন। আর তাই বদলি এখন সর্বমহলে আলোচিত।
২০১৯ ইং সনে ৬ সেপ্টেম্বর বদলি বাস্তবায়ন কমিটি ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে বদলি’র দাবিতে মানব বন্ধন করেন। উক্ত মানব বন্ধনে যে সমস্ত শিক্ষকমন্ডলীরা এসে মানববন্ধনকে সাফল্যমন্ডিত করেছেন তাদের কাছে বদলি বাস্তবায়ন কমিটি কৃতজ্ঞ। এরপর আরও কয়েকদফায় বদলি’র দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিকী অনশন করেন। প্রথমদিকে এ আন্দোলন নিয়ে বিভিন্নজন সমালোচনা করলেও, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষক মন্ডলী এবং আমলারা এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারেন এবং বদলি আন্দোলনকে সমর্থন করতে থাকেন।
এছাড়াও বদলি’র প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন শিক্ষা সংবাদ চ্যানেল ও শিক্ষা টিভি। তাদের সকলের কাছেই বদলি বাস্তবায়ন কমিটি কৃতজ্ঞ। কোভিট-১৯/ করোনা’র কারনে সকল কার্যক্রমের মত বদলি কার্যক্রমও কিছুটা থিতু হয়ে পড়ে। বদলি বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখে বদলি প্রত্যাশি শিক্ষকরা হাইকোর্টে রীট করেন যার কার্যক্রম এখনও চলমান।
সবচেয়ে কষ্ট এবং যন্ত্রনার বিষয় হল বদলি চালু না থাকায় প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য নিবন্ধিত ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা গনবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করেন এবং তারা পুনরায় সুপারিশ প্রাপ্ত হন। যাদের চাকুরীটা জরুরী সেই নিবন্ধনধারী বেকার ভাইয়েরা বেকারই রয়ে যাচ্ছে।
এর থেকে পরিত্রানের একমাত্র উপায় বদলি ব্যবস্থা চালু করা।
৩য় গনবিজ্ঞপ্তি সুপারিশের পর এই বিষয়টা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে।
পরিশেষে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সম্মানিত কর্তপক্ষের কাছে বিনীত নিবেদন, ইনডেক্সধারী এবং নিবন্ধনধারী সকলের কথা বিবেচনা করে ৪র্থ গনবিজ্ঞপ্তির আগেই বদলি ব্যবস্থা চালু করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। অন্যথায়, ইনডেক্সধারী এবং নিবন্ধনধারী সকলে মিলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। কারন সকলের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
সর্বোপরি, সকলের সু-স্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করছি।
ধন্যবাদান্তে,
হারুন অর রশিদ লিটন
সভাপতি
এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটি
0 মন্তব্যসমূহ