Hot Posts

6/recent/ticker-posts

বরিশালে শ্রমিক নেতার কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, আহত ২০।


বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় সুলতান মাহমুদসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।


রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রূপাতলী বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন মোল্লা মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।





টার্মিনালের কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে রূপাতলী বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক শ্রমিক সংগঠন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সুলতান মাহমুদ। গত বছর মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও টেম্পো মালিক সমিতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ শাহরিয়ার বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে পৃথক একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।


পরিবহন শ্রমিকরা জানান, শ্রমিক ইউনিয়নের দু’পক্ষই ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট। সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিকে সমর্থন দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এবং পরিমল চন্দ্র দাসের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিকে সমর্থন দিচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। গত বছরও রূপাতলী বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকবার বিবাদে জড়িয়েছেন। হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে। এরপর বেশ কয়েক মাস দু’পক্ষই কিছুটা শান্ত ছিল। কিন্তু গত ১৫ মার্চ থেকে ফের বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে দু’পক্ষ।






রূপাতলী বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ অভিযোগ করেন, পরিমল চন্দ্র দাস ও আহমেদ শাহরিয়ার বাবুর নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে সাধারণ শ্রমিকরা মেনে নেননি। ওই কমিটি বাইরের লোকজন নিয়ে করা হয়েছে। টার্মিনালের সাধারণ শ্রমিকরা ওই কমিটিতে নেই। তারা বেশ কিছুদিন ধরে জোরপূর্বক টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। টার্মিনালের সাধারণ শ্রমিকদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছেন।


তিনি আরও জানান, পরিমল ও বাবুর পক্ষ নিয়ে বরিশাল সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, আতিক উল্লাহ মুনিম, রাজিব খান ও রইজ আহম্মেদ মান্নার নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তারা কার্যালয়ের টেবিল-চেয়ারসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। বাধা দিতে গেলে আমাকে (সুলতান মোল্লা) ও মানিক, নাসির, শামিম হাওলাদার, রিজন, বিপ্লব, সালাম হাওলাদার, সোহাগ, ফারুক হাওলাদার ও রুবেল মোল্লাসহ অন্তত ২০-২৫ জনকে মারধর করে।





তবে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের অন্য অংশের সভাপতি, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, আমার সংগঠনের কোনো সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে সুলতান মাহমুদ মিথ্যা কথা রটাচ্ছেন। তবে জানতে পেরেছি নিজেদের মধ্যে কোন্দল থেকে সুলতান মাহমুদের লোকজন আজ নিজেরাই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।


বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. এনামুল হক জানান, বাস টার্মিনাল সংলগ্ন একটি অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ