আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ করা অনুচিত বলে জানিয়েছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে নিজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা চীন সব সময় সম্মান করে।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিগত সময়ে যে অগ্রগতি হয়েছে তার উল্লেখ করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এগিয়ে চলা অন্যান্য এশিয়ান দেশের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ। চীন বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে পাশে থাকতে চায়।
সেই সঙ্গে চীনের জিডিপি ১৯ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার জানিয়ে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, উভয় দেশ পারস্পরিক লাভ ও মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করতে পারে।
ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের বিষয়টি উল্লেখ করে ইয়াও ওয়েন বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ফলে পরিবেশের সুরক্ষার সঙ্গে প্রকল্পসংলগ্ন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
রাজশাহীতে নির্মিতব্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভূ-উপরস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্পে চীনা সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন আরও ভূমিকা রাখতে চায়। চীন দুই দেশের মধ্যে সম্পৃক্ততা আর বাড়াতে চায় বলে জানান ইয়াও ওয়েন।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত চীনের অর্থায়নে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এশিয়ার দেশ হিসেবে এ অর্জন আমাদের সবার জন্যই গর্বের। তিনি নব্বইয়ের দশকে চীনের রেশনজিং ভ্রমণের স্মৃতিচারণা উল্লেখ করে বলেন, চীনের অবকাঠামো, সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রমাণ তখনই অনুধাবন করা যেত।
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীনা সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। এ প্রকল্পটিকে একটি আদর্শ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণের ফলে উৎপন্ন বর্জ্য নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এ প্রকল্প বাংলাদেশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
আলোচনা শেষে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং চীনের রাষ্ট্রদূত স্ব-স্ব দেশের স্মারক উপহার বিনিময় করেন।
0 মন্তব্যসমূহ