Hot Posts

6/recent/ticker-posts

নুর-মেন্দি সাফাদির বৈঠক নিয়ে যা বললেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

 

‘সাফাদি একজন সিরীয়, বিশ্বাসঘাতক’

নুর-মেন্দি সাফাদির বৈঠক নিয়ে যা বললেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

ফিলিস্তিন ও তার জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন নতুন কিছু নয়। অনেকের কাছেই ফিলিস্তিন অন্যরকম এক আবেগ-ভালোবাসার নাম। তবে সম্প্রতি সৌদি আরবে গিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণপরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর ইসরাইলের লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মতে, মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে নুরুল হক নুর ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় আঘাত করেছেন। অনেকের মতে, নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে নুর এ বৈঠক করেন।


বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লাভের পর থেকে ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে এসেছে। অন্যদিকে একজন ‘গণতন্ত্রকামী’ নেতা হিসেবে নুরের এমন আচরণ বাংলাদেশের ৯০ ভাগ জনগণের মতের বিরুদ্ধে যায়। এই ৯০ শতাংশ মানুষের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে কেউ তো গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।

নুর-সাফাদির বৈঠক প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রথমত এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের ওপর আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। এ বিষয়ে যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, তারা সেটাই করবে বলে আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। নির্বাচনের আগে পরিবেশ উত্তপ্ত অবস্থায় থাকায় কিছু ব্যক্তি এটাকে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। আমরাও এটা বুঝতে পারি। বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তারাই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

রাষ্ট্রদূত রামাদান মেন্দি এন সাফাদির পরিচয় তুলে ধরে বলেন: তার নাম মেন্দি সাফাদি নয়। তার আসল নাম মুনজের সাফাদি। তিনি গুলেন হায়েস্তএলাকার একজন সিরিয়ান। এই এলাকাটি ১৯৬৫ সালে ইসরায়েল দখল করে নিয়েছে। এই ব্যক্তি মোসাদকে সহায়তা করে, এ কারণে মা-বাবা, ভাই-বোন সাফাদিকে ত্যাগ করে ও পরিবার থেকে বিতাড়িত করে। এরপর সে গুলেন হায়েস্ত ছেড়ে তেল আবিবে যায় এবং সেখানে শিক্ষাজীবন শেষে মোসাদে যোগ দেয়।

মেন্দি এন সাফাদিকে একজন বিশ্বাসঘাতক উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, এমন চরিত্রের (বিশ্বাসঘাতক) একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করে কেউ যদি মনে করে সে বড় রাজনীতিবিদ হয়ে যাবে, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। যে দেশের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ আমাদের পাশে আছে, তখন কোন ব্যক্তি কোথায় কার সঙ্গে মিটিং করল তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না।’

ফিলিস্তিনের এই প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘সদ্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লাভ করা বাংলাদেশে প্রথম যে দেশগুলো স্বীকৃতি জানিয়ে চিঠি লেখে, তার মধ্যে একটি ছিল ইসরায়েল। কিন্তু বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার ও শেখ মুজিবুর রহমান সেই স্বীকৃতি গ্রহণ করেননি। বরং সেই চিঠি ফেরত পাঠিয়ে দেন। দুই দেশের সরকার ও জনগণের মধ্যকার এই বন্ধুত্ব ভবিষ্যতেও থাকবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব তাদের সমর্থনের জন্য। আমরা কখনোই ভুলে যাব না। আমাদের সন্তানরাও মনে রাখবে। এই দেশের মানুষ, দেশের সরকার কীভাবে আমাদের পাশে ছিল। সব আন্তর্জাতিক ফোরামে যেখানেই সমর্থন দরকার হয়েছে, বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিয়েছে। ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ যখনই এসেছে, বাংলাদেশ সর্বপ্রথম আমাদের পক্ষে তার ভোটটি দিয়েছে। এ সবই ফিলিস্তিনের ইতিহাসে লেখা থাকবে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ