উপরে নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
তাং:০৭/০৭/২০২১ ইং।
চরম শিক্ষক সংকটে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়।চলমান পেনডামিক সিচুয়েশান ও আড়াই বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় এ তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম সংকট ও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তার উপর শিক্ষক সংকট এ অবস্থায় আরো তীব্রতর হচ্ছে।
চলমান পরিস্থিতিতে জেএসসি-জেডিসি ও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা এবং দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় মানসিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে , এখন যদি শিক্ষক সংকট দেখা দেয় তাহলে স্কুল কলেজ খুললে কিভাবে চাপ সামাল দিবে এটা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
আড়াই বছর নিয়োগ না থাকায় এবং অনেক শিক্ষক অবসরে যাওয়ার জন্য এ ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের মতে, অনলাইন ক্লাস যদিও সময়োপযোগী ও আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এবং অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও চালু করা হয়েছে কিন্তু অনেক শিক্ষক বয়সজনিত কারণে ও অভিজ্ঞতার অভাবে ক্লাস নিতে পারছে না বা জুম ক্লাস ও লাইভ ক্লাস নিতে পারছে না। এক্ষেত্রে তরুণ শিক্ষক যারা আইসিটি ও চলমান প্রযুক্তির ব্যবহার করে অভ্যস্ত তাদের যদি নিয়োগ না দেওয়া হয় তবে এ সংকট নিরসন সম্ভব নয়। তাদের মতে, দ্বিতীয় সাইকেলে এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে ঊনচল্লিশ হাজার তরুণ প্রজন্মের শিক্ষক বর্তমান অনলাইন ক্লাস ও প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে থাকায় চলমান লকডাউনে ক্লাস চালানোর দিকে দক্ষ হিসেবে কাজ করছে।আমরা শুনেছি তৃতীয় গনবিজ্ঞপ্তির রেজাল্ট প্রকাশের অপেক্ষায় আছে কিন্তু মামলা জটিলতার কারণে ফল প্রকাশ করতে পারছে না এনটিআরসিএ।এখন এই অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক এই সময়ে নিয়োগ দেয়া হয় তবে কিছুটা হলেও ক্ষতি পোষানো সম্ভব নচেৎ এই সংকটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে এ সংকট নিরসনে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিলেও বাংলাদেশ কেন এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে এটা নিয়েও বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত। বাংলাদেশের ৯৭% শিক্ষা বেসরকারি শিক্ষকদের উপর নির্ভর করে কিন্তু এখানেই যেন সবচাইতে বড় সংকট ও বিপর্যয় কিন্তু কেন? এবিষয়ে সঠিক উত্তর কেউ জানে না। বেসরকারি শিক্ষকদের নানানভাবে হয়রানি, বঞ্চিত করা হচ্ছে শতভাগ উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা,বাড়ী ভাড়া হতে এবং তাদেরকে শুধু মূল স্কেল দেওয়া হচ্ছে একারণে অনেক মেধাবী ছাত্র এ পেশায় আসছে না তার উপর ছিল উৎকষের মাধ্যমে কমিটির নিয়োগ যেটা আরো সংকট তৈরি করেছে।
নিয়োগের সচ্ছতা আনতে আলাদাভাবে গঠন করা হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ ( এনটিআরসিএ) যারা সচ্ছতার মাধ্যমে ও সফলভাবেই প্রথম ও দ্বিতীয় গনবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু তাদের নীতিমালা ও ভুল ব্যবস্থাপনায় তাদের বিরুদ্ধে বঞ্চিতরা মামলা দায়ের করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে,তারা ১-১২ তম নিবন্ধিতদের বয়সের জালে আটকে ফেলেছে,১৩তম থেকে উপজেলা ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার নীতিমালা করলেও তাদের একক নিয়োগ দেয়নি এজন্যই ১-১২ তমরা ১৬৬ টি কন্টেম্প মামলা ও ১৩ তমরা একক নিয়োগের মামলা করে। এ মামলা চলাকালীন ঘনঘন চেয়ারম্যান বদলি আরো সংকট তৈরি করেছে। একজন একটু ভালো ভাবে বুঝতে না বুঝতেই তাকে বদলি করে অন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।
অনেকের অভিযোগ , এনটিআরসিএ এর সচিব ও কর্মকর্তাদের কারসাজির জন্য ঘনঘন চেয়ারম্যান বদলি করা হয়েছে কারন তাদের মধ্যে অনেকেই কনটেম্পরারিদের সহোযোগিতা ও উৎকষ নেওয়ার অভিযোগ করেছে। আসফাক স্যার যদিও মামলা উপেক্ষা করে সংকট নিরসনে দ্বিতীয় গনবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এবং রেজাল্ট প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু তার মতো সাহসী ভূমিকা পালন করতে পারে এমন একজন চেয়ারম্যান আসে নি। অনেকেই অবশ্যই চেষ্টা করছে কিন্তু মামলাবাজদের সাথে পেরে উঠেনি।এর আগে আ্শরাফ স্যার ১৩তম রিটকারীদের মামলা এড়াতে এবং হাইকোর্টের রুল মেনেই তাদের একক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েই তৃতীয় গনবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু এখন আবার তাদেরকে নিয়োগ না দেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ১৩তম রিটকারীরা।১৩তমরা হুমকি দিয়েছে তাদের নিয়োগ না দিয়ে তৃতীয় গনবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করলে হাইকোর্টের আইন অমান্য করা হবে যা আদালত অবমাননার সামিল।
আরো অসংখ্য সমস্যার কবলে পড়েছে যেমন,১৬ তমদের ভাইবা এখনো শেষ করতে পারে নি,১৭ তমদের কিভাবে পরীক্ষা নিবে বা তাদের নতুন সিলেবাসে পরীক্ষা হবে কিনা ! আরো নানান বিধিনিষেধের মধ্যে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে।
এদিকে এই বিশাল সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠান নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রনালয়ের কোন দায়িত্ব আছে কিনা এটা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে এতো এতো শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষক নেতারা এ বিষয়ে কেন নিশ্চুপ, এটা নিয়ে তারা কেন কথা বলছে না, অর্ধশতাধিক শিক্ষক নিয়োগের ফল কেন প্রকাশ করছে না এনটিআরসিএ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে না,এটা ফল প্রত্যাশিরা সন্দেহের চোখে দেখছে। তৃতীয় গনবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ এর বিভিন্ন সংগঠনের তরুণ নেতারা যেমন শান্ত রাজু সমনসহ অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে মিছিল মিটিং ও আন্দোলন করে আসছে যাতে সচ্ছতার মাধ্যমে দ্রুত তৃতীয় গনবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ