কারখানায় ফায়ার এক্সিট ও ইমারজেন্সী সিঁড়ি থাকার কথা। অথচ আগুন লাগলে ছাদের সিঁড়ির দরজা পর্যন্ত তালা মেরে রাখা হয় কেন? অগ্নিকাণ্ডে কারখানার মালামালের নিরাপত্তা নিয়ে যতটা উদ্বেগ। তার বিন্দুমাত্রও শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে নেই কেন?
অগ্নিদগ্ধ কারখানাটিতে ফায়ার এক্সিট ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তাহলে এগুলো তদারকির দায়িত্ব ছিল কার? কারখানাটি নকশা বহিভূর্ত ছিল। এটা দেখার দায়িত্ব ছিল কার? ফায়ার সার্ভিস বলেছে, প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় ভয়াবহ হয়ে ওঠে আগুন। এগুলো তদারকির দায়িত্ব ছিল কার? কারখানাটিতে গণহারে শিশু শ্রমিক কর্মরত ছিল। অথচ এতদিন ধরে এটা কারো চোখে পড়লো না কেন?
তালাবদ্ধ আগুনে ৫২ শ্রমিকের মৃত্যুতে কারখানার মালিক বললেন, “এর দায় কি আমার?” কারন মালিকরা ঠিকই জানেন, যথারীতি তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। যথারীতি তদন্ত প্রতিবেদন হবে। লাশপ্রতি শ্রমিকের পরিবারকে ‘জীবনের মূল্য নির্ধারণী’ যৎসামান্য অনুদান দেয়া হবে। নিহতের পরিবারের একজনকে হয়ত চাকরীও দেওয়া হবে। আর এভাবেই যথারীতি কারখানাগুলো তালাবদ্ধ থাকবে। মালামালের নিরাপত্তার স্বার্থে। ছাদে উঠার পথও তালা মেরে রাখা হবে। যথারীতিই।
অথচ মালিক, কর্তৃপক্ষ, সরকারী অধিদপ্তর, তদারকি সংস্থা, প্রশাসন বা সরকার- কারোই যেন কোন দায় দায়িত্ব নাই! যেমনটা আজ কারখানার মালিক বললেন, “এর দায় কি আমার?”
আগুনে পোঁড়া, ভবনে ধ্বসা, পানিতে ডুবা, রাজপথে পিষে মরা প্রতিটা অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের দায় কি শুধুই নিহতের?
ড. তুহিন মালিক
0 মন্তব্যসমূহ