বৈষম্যবিরোধী বিলের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন না জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, 'পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিসিএস) লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অনেকে চাকরি পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, 'এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বৈষম্য করে। তবে রাজ্য বৈষম্য করলে কী হবে, তা বিলে বলা নেই। '
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার সংসদে 'বৈষম্যবিরোধী বিল-২০২২' উত্থাপন করেন। আইনমন্ত্রী বিলটি উত্থাপনের অনুমতি চাইলে বিএনপি'র সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ আপত্তি তোলেন। কিন্তু তাঁর আপত্তি খারিজ করে দেয় সংসদ।
এরপর ৩০ দিনের মধ্যে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদনের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব ধরনের বৈষম্য রোধেই এই আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
বিএনপির হারুনুর রশীদ ধর্মীয় উপাসনার 'সর্বজনীন স্থান' সংজ্ঞার বিরোধিতা করে বলেন, 'ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো পাবলিক প্লেস নয়। অন্য ধর্মের কাউকে মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিলে বলা হয়েছে, ধর্মীয় স্থানে প্রবেশ না করলে বৈষম্য হবে- এর ব্যাখ্যা চাই।
প্রস্তাবিত আইনের ৩(ঘ) ধারা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'শিশুর একটি পরিচয় থাকতে হবে। বাবার পরিচয় নিয়ে সমস্যা হলে মা পরিচয় থাকতে হবে। দাদা-দাদি থাকবেন। এই বিধান থাকলে ব্যভিচার সহ্য করা হবে। বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে।
বিলের এই ধারায় বলা হয়েছে, যথাযথ কারণ ছাড়াই পিতা-মাতার পরিচয় দিতে না পারার কারণে কোনো শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে অস্বীকৃতি বা বাধা বা বাধা বা বাধা, বৈষম্য, বঞ্চনা, বিধিনিষেধ আরোপ, সীমাবদ্ধতা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বা শিক্ষা থেকে বহিষ্কার অন্য যে কোনো ধরনের বৈষম্য করা যাবে না।
সাংসদ হারুন বলেন, ‘বিলে বলা হয়েছে, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না। এই সব অনুষ্ঠানের নামে যদি বেলেল্লাপনা হয় তবে কী হবে? কিছুদিন আগে দেখলাম তাপস নামে একজনের সন্তানের বিয়েতে পর্ণ তারকা আসল। অনুষ্ঠান করে চলে গেল। তথ্যমন্ত্রী বললেন, তার আসার অনুমতি নেই। কিন্তু পর্ণ তারকা এসে অনুষ্ঠান করে চলে গেল। ’
এসব সমালোচনার বিপরীতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিলটি কমিটিতে গেলে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে। তারপর আবার সংসদে আসবে। আবার আলোচনা হবে। তারপরও জবাব দিচ্ছি। ’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার নিয়ে তিনি যে উদ্বিগ্ন তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি এমন একটি দলের সদস্য, যে দলটি ২১ আগস্ট ২০০৪ সালে অন্য দলের সকল নেতা-নেত্রীদের এবং জাতির পিতার কন্যাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। তারা প্রায় সফল হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ মালিক। উনি বেঁচে গেছেন। সেই দলের একজন সংসদ সদস্য আমাকে মানবাধিকার শেখাচ্ছেন। ’
আইনমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘ওনার কাছ থেকে আমার মানবাধিকারের শিক্ষা নিতে হবে না। আমার মানবাধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান আছে। উনি যে প্রশ্নগুলো করেছেন সময় হলে অবশ্যই জবাব দেব। এখানে বক্তৃতা দিয়ে তারপর একটা সংকট সৃষ্টি করার যে হুমকি দিলেন উনি, আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ আর বোকা নাই। উনাদের এসব কথায় আর কাজ হবে না। উনার প্রত্যেকটা প্রশ্নের জবাব আমি দেব। সময় হলে দেব। ’
0 মন্তব্যসমূহ