Hot Posts

6/recent/ticker-posts

সৌদি আরবে লাশ হওয়া বোনের ছবি বুকপকেটে নিয়ে যে কারণে ঘুরছেন ভাই!

             


সৌদি আরব থেকে বোনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের কাছে আবেদন করেছেন ভাই আক্কাস মিয়া। 


মঙ্গলবার দায়ের করা আবেদনে তিনি জানান, বোনের দেহ পেতে দালাল রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। লাশটি বিমানবন্দরে পৌঁছালে আক্কাস মিয়ার মোবাইল নম্বর রিসিভ করার জন্য দিয়েছে।


 ফেব্রুয়ারিতে বোন মারা যায়, ভাই এখনও জানে না তার লাশ কবে দেশে আসবে। লুঙ্গি, নোংরা জামা পরে ভাই প্রথম আলোতেই আক্ষেপ করে বলল, 'কত জায়গায় ছুটেছি দিদির দেহ আনতে, লাভ নেই। '  


বোনের ছবি আছে কি না জানতে চাইলে শার্টের পকেটে হাত রেখে পরম যত্নে বোনের ছবি বের করে নেয়। ২০১৯ সালে সৌদি আরবে যাওয়ার আগে পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবি তোলেন বোন। ৩৩ বছর বয়সী ওই বোনের নাম ফাতেমা আক্তার। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি সৌদি আরবে মারা যান। 

প্রায় ১১ দিন পর এ খবর জানান ভাই আক্কাস মিয়া ও শরিফুল ইসলাম।


আক্কাস মিয়া বলেন, 'আমার বোনের ফেব্রুয়ারিতে দেশে আসন হওয়ার কথা ছিল। দালাল, বোন বা বোন আত্মহত্যা করছে। 'যে মানুষটি দেশে আসার কথা শুনে খুশি, সে কি আত্মহত্যা করবে?


আজ আক্কাস মিয়া ও শরিফুল ইসলাম কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসে বসে তাদের বোনের মরদেহ দেশে আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফাতেমা ই সবচেয়ে বেশি সুস্থ ছিলেন বলে জানান দুই ভাই।


তিনি বলেন, ঠান্ডা মেজাজের বোন আত্মহত্যা করেছে- এটা তারা মেনে নিতে পারছে না।

শরিফুল ইসলাম জানান, ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফাতেমার সঙ্গে ফোনে কথা হয়। এরপর ফাতেমা বলেন, তিনি খুব রেগে গেছেন যে, তিনি মালিকের কাছে দেশে যাওয়ার জন্য টিকেট চেয়েছেন। মালিকের স্ত্রী তাকে হত্যা করতে আসছে বলে ফোন লাইন কেটে দেয় এবং পরে আবার কথা বলবে।

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কী হইছে বোন, কান্দো ক্যান—ফোনেই জানতে চাইছিলাম। বোন তাড়াতাড়ি ফোনের লাইন কেটে দেয়। তারপর কতবার রিং হইছে, বোন আর ফোন ধরে নাই।’

স্থানীয় দালালের কাছে বোনের খবর জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যেতে থাকেন।


বোন জীবিত না মৃত—এ খবর জানতে চেয়ে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর মডেল থানায় দালালের নামে সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন দুই ভাই। এরপর গ্রামের মেম্বারসহ মুরব্বিদের নিয়ে দালালের বাড়িতে গেলে চাপের মুখে দালাল বলেন, ফাতেমা মারা গেছেন। সৌদি মালিক টিকিট হাতে নিয়ে ফাতেমাকে ডাকতে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। পরে বন্ধ দরজা খুলে ঘরে ঢুকে দেখেন ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন।


দুই ভাই জানালেন, মাস ছয়েক আগেও ভিডিও কলে বোন তাঁর ভাঙা আঙুল দেখিয়ে জানিয়েছিলেন, মালিকের বউ মেরেছেন। খেতে চাইলে খাবার না দেওয়াসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথাও জানিয়েছিলেন ফাতেমা। তাই ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন—এটা তাঁরা মানতে নারাজ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ