বিয়ের প্রলোভনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক ইউপি সদস্যকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ওই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার শহীদুল ইসলাম আবীর ওরফে আবিয়ার রহমান (৫০) উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম সরদারের ছেলে ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর নানা জানান, কালিগঞ্জ উপজেলায় তিনি মেয়েকে বিয়ে দেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে তার মেয়ের পাঁচ বছর আগে তালাক হয়ে যায়। তাঁদের ঘরে একটি মেয়ে আছে। তালাকের পর তাঁর মেয়ে ভারতে কাজ করতে গিয়ে সেখানে আবার বিয়ে করেন। তাঁর স্বামীও অন্যত্র বিয়ে করেন। সে কারণে নাতনিকে তিনি তাঁর কাছে রেখে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন। বর্তমানে সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে যাতায়াতের সুযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম তাঁর নাতনিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ষণ করেন। গোপনে ধর্ষণের ভিডিও করে দাঁতিনাখালি গ্রামের হাসানুল ইসলাম ওরফে সামছুদ্দিন। পরে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শহীদুল ইসলাম তাঁর নাতনিকে প্রায়ই ধর্ষণ করতেন। একইভাবে তাঁর সহযোগী হাসানুল ইসলামও তাঁর নাতনিকে ঘেরের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
তিনি আরও জানান, একপর্যায়ে তাঁর নাতনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শহীদুল ইসলাম তাঁর নাতনিকে সদরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটান। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলামের কাছে নাতনির বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আজ অবধি তিনি তাঁর নাতনিকে বিয়ে করেননি। তাই বাধ্য হয়ে তিনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বাদল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্কুলছাত্রীর নানি বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম, হাসানুল ও আবু নাঈমকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে নগ্ন ভিডিওসহ তাঁর মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরে মেয়েটি সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বন্যা খাতুনের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। মেয়েটিকে তার নানির জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ