বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) চিঠি লিখেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য। তাঁরা হলেন— স্লোভাকিয়ার ইভান স্টেফানেক, চেক প্রজাতন্ত্রের মাইকেলা সোজড্রোভা, বুলগেরিয়ার আন্দ্রে কোভাতচেভ, ডেনমার্কের কারেন মেলচিওর, স্পেনের হাভিয়ের নার্ত এবং ফিনল্যান্ডের হেইডি হাউটালা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলকে সোমবার (১২ জুন) লেখা চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, এই চিঠির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা জানাতে চাই এবং আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাতে চাই।
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, মিথ্যা মামলার কথা উল্লেখ করে তাঁরা বলেছেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই সরকার গণতান্ত্রিক স্থান সংকুচিত করেছে এবং সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ প্রণয়নের পর থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।
গুমের বিষয়ে সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফরে সরকারকে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কনভেনশনে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানিয়েছেন, সে কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা।
সর্বোপরি তাঁরা ২০২৪ সালের শুরুতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপির আলোচনার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। চলমান সংকটের একটি টেকসই ও গণতান্ত্রিক সমাধান খুঁজে বের করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
শুধু তা–ই নয়, মানবাধিকার এজেন্ডা নিয়ে অবিরাম সংলাপে না থেকে বাস্তব ফলাফল আনতে প্রয়োজনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং জিএসপি প্লাস প্রণোদনার শর্তগুলো বারবার বাংলাদেশকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য।
0 মন্তব্যসমূহ